সুস্থ থাকতে রাতে কতক্ষণ ঘুমানো জরুরি?
সুস্থ থাকতে রাতে কতক্ষণ ঘুমানো জরুরি?
![]() |
সুস্থ থাকতে রাতে কতক্ষণ ঘুমানো জরুরি? |
ঘুম হলো শরীর এবং মনের পুনরুদ্ধারের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। আমাদের জীবনের বেশিরভাগ সময়ই আমরা কাজে, পড়াশোনায় কিংবা অন্যান্য কাজের মধ্যে ব্যস্ত থাকি, কিন্তু সঠিক পরিমাণে ঘুম না হলে এর প্রভাব শরীরের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক হতে পারে। রাতের ঘুমের পরিমাণের সাথে আমাদের শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতা গভীরভাবে সম্পর্কিত।
ঘুমের প্রয়োজনীয়তা
একটি পূর্ণাঙ্গ ঘুমের চক্র আমাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। যখন আমরা ঘুমাই, শরীরের কোষগুলি পুনর্নির্মাণ হয়, নতুন শক্তি সঞ্চয় হয় এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এর পাশাপাশি, সঠিক ঘুম হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রেস এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
রাতের ঘুমের জন্য আদর্শ সময়
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। তবে, বিভিন্ন বয়সী ব্যক্তির জন্য ঘুমের প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হতে পারে:
- শিশু (০-৫ বছর): ১০-১৪ ঘণ্টা
- কিশোর (৬-১৭ বছর): ৮-১০ ঘণ্টা
- প্রাপ্তবয়স্ক (১৮-৬৪ বছর): ৭-৯ ঘণ্টা
- বয়স্ক (৬৫ বছর বা তার বেশি): ৭-৮ ঘণ্টা
ঘুমের অভাবের প্রভাব
ঘুমের অভাব বা অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে আমাদের শরীরের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন:
- মানসিক স্বাস্থ্য: অনিদ্রা বা কম ঘুম মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার কারণ হতে পারে।
- শারীরিক সমস্যা: দীর্ঘ সময় ধরে কম ঘুমানোর ফলে হার্ট ডিজিজ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা: ঘুমের অভাবে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে পারে এবং মনোযোগের অভাব হতে পারে।
- ওজন বৃদ্ধি: ঘুম কম হলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
ঘুমের ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা
- নিয়মিত সময় ঘুমানো: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- স্বাস্থ্যকর পরিবেশ: শোয়ার স্থান আরামদায়ক এবং শান্ত থাকা উচিত।
- ইলেকট্রনিক্স এড়িয়ে চলা: ঘুমানোর আগে মোবাইল, কম্পিউটার বা টিভি দেখা থেকে বিরত থাকুন।
- অতিরিক্ত ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা: ক্যাফেইন জাতীয় পানীয়ের গ্রহণ সীমিত করুন, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর।
- শরীরচর্চা: নিয়মিত শারীরিক কসরত করলে ঘুম ভালো হয়, তবে ঘুমানোর কিছুক্ষণ আগে ভারী ব্যায়াম থেকে বিরত থাকুন।
উপসংহার
সুস্থ থাকতে রাতে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধুমাত্র শারীরিক সুস্থতার জন্য নয়, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত জরুরি। সুতরাং, যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ এবং সুখী থাকতে চান, তবে ঘুমের মান এবং সময়ের প্রতি গুরুত্ব দিন।