জুমার দিনের ১১ টি আমল
জুমার দিনের ১১টি আমল
জুমার দিনের ১১ টি আমল |
জুমার দিন মুসলমানদের জন্য একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনে আল্লাহ তাআলা বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন এবং দোয়া কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুমার দিনের অনেক আমল ও ফজিলত সম্পর্কে আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন। আসুন, জুমার দিনের ১১টি গুরুত্বপূর্ণ আমল সম্পর্কে জানি।
১. গোসল করা
জুমার দিনে গোসল করা সুন্নত। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: "তোমাদের প্রত্যেকের জন্য জুমার দিনে গোসল করা আবশ্যক।" (বুখারি, মুসলিম)
২. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধি ব্যবহার করা
জুমার দিন উত্তম পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা সুন্নত। এটি মানুষের ব্যক্তিত্বকে উন্নত করে এবং ইবাদতে মনোযোগ বৃদ্ধি করে।
৩. নখ, চুল ও শরীরের অপ্রয়োজনীয় অংশ পরিষ্কার করা
জুমার দিনে নখ কাটা, গোঁফ ছাঁটা, বগল ও নাভির নিচের লোম পরিষ্কার করাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটি সুন্নত এবং স্বাস্থ্যসম্মত।
৪. সূরা কাহফ তিলাওয়াত করা
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “যে ব্যক্তি জুমার দিনে সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দুই জুমার মাঝখানের সময় আলোকিত হবে।” (মুসলিম)
৫. বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা
জুমার দিনে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেছেন: “তোমরা জুমার দিনে আমার প্রতি অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ কর, কেননা এই দিনে তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়।” (আবু দাউদ, ইবন মাজাহ)
৬. মসজিদে প্রথম সারিতে গিয়ে বসা
জুমার নামাজের জন্য যত আগে মসজিদে যাওয়া যায়, তত বেশি সওয়াব পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “যে ব্যক্তি জুমার দিনে আগে আগে মসজিদে যায়, সে একটি উট কুরবানির সওয়াব পায়।” (বুখারি, মুসলিম)
৭. খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা
জুমার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা। খুতবার সময় কথা বলা নিষেধ এবং এটি নামাজেরই অংশ।
৮. অধিক পরিমাণে দোয়া করা
জুমার দিনে এমন একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, যখন দোয়া কবুল হয়। রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন: “জুমার দিনে একটি বিশেষ মুহূর্ত আছে, যখন কোনো মুসলমান বান্দা নামাজরত অবস্থায় আল্লাহর কাছে যা চায়, তা তাকে দেওয়া হয়।” (বুখারি, মুসলিম)
৯. আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা
কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “হে মুমিনগণ! যখন জুমার দিনের নামাজের আহ্বান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে এগিয়ে যাও এবং বেচাকেনা বন্ধ করে দাও। এটি তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বুঝতে।” (সুরা আল-জুমু‘আ: ৯)
১০. বেশি বেশি নফল ইবাদত করা
জুমার দিনে নফল নামাজ, দোয়া, তাসবিহ-তাহলিল, ইস্তেগফার ইত্যাদি বেশি বেশি করা উচিত।
১১. গরীব-দুঃখীদের সাহায্য করা
জুমার দিনে দান-সদকা করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “সদকা করার সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন।” (ইবন খুজাইমা)
উপসংহার
জুমার দিন আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত ও রহমতের দিন। তাই এই দিনের ফজিলত ও আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করা উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।