ইফতার আয়োজনের সুন্নত পদ্ধতি

ইফতার আয়োজনের সুন্নত পদ্ধতি



ইফতার হলো রমজান মাসের একটি বিশেষ মুহূর্ত, যা প্রতিদিন সঠিকভাবে পালন করা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে ইফতার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবং এটি একটি সুন্নত পদ্ধতি হিসেবে আমাদের সামনে এসেছে। রোজাদাররা ইফতার করার সময় কিভাবে সুন্নত অনুসরণ করবেন, সেটা জানাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

১. ইফতার শুরু করার পদ্ধতি ইফতার শুরু করার আগে নিম্নলিখিত সুন্নত পদ্ধতিগুলো পালন করা উচিত:

  • খেজুর দিয়ে ইফতার করা: রাসূল (সাঃ) খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, যদি খেজুর না পাওয়া যেত, তাহলে পানি দিয়ে ইফতার করতেন। তাই ইফতার শুরু করার সময় খেজুর খাওয়ার চেষ্টা করুন, যদি খেজুর না থাকে, তবে পানি পান করুন। হাদিসে এসেছে, "যে ব্যক্তি রোজা রাখবে এবং খেজুর দিয়ে ইফতার করবে, তার রোজা পূর্ণ হবে।" (আবু দাউদ)

  • দোয়া করা: ইফতার করার পূর্বে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সাঃ) ইফতার করার সময় এই দোয়া পড়তেন:
    "اللهم إني لك صمت وبك آمنت وعليك توكلت، وعليك توكلت، وعلى رزقك أفطرت"
    (অল্লাহুম্মা ইন্নি লাকা সামতু, ওয়া বিকা আমানতু, ওয়া আলাইকো তওয়াক্কাল্তু, ওয়া আলা রিযকিকা আফতার্তু)
    অর্থাৎ, "হে আল্লাহ! আমি তোমার জন্য রোজা রেখেছি, তোমার ওপর বিশ্বাস রেখেছি, তোমারই ওপর ভরসা করেছি, এবং তোমারই দান দ্বারা ইফতার করছি।"

২. ইফতারের সময় দোয়া গ্রহণযোগ্য হওয়া রমজান মাসে ইফতারের সময় আল্লাহর কাছে দোয়া করার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন:
"রোজাদারের জন্য তিনটি সময় থাকে, যখন তার দোয়া কবুল হয়—ইফতার করার সময়, প্রার্থনা করার সময় এবং শবে কদর রাতের সময়।"
এজন্য, ইফতার করার মুহূর্তে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৩. ইফতার করার পরে সুন্নত অনুসরণ ইফতার করার পরে কিছু সুন্নত আমল আছে যা পালন করা উচিত:

  • মাগরিব নামাজ আদায় করা: ইফতার করার পর প্রথমে মাগরিব নামাজ আদায় করা সুন্নত। এই নামাজের পরেই অন্যান্য কাজ শুরু করা উচিত।

  • তাহাজ্জুদ নামাজ: যদি সম্ভব হয়, রমজান মাসে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া উচিত। এটি একটি বিশেষ নফল নামাজ যা রাসূল (সাঃ) নিয়মিত পড়তেন।

৪. খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে পরিমিতি বজায় রাখা ইফতার করতে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষ অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। রাসূল (সাঃ) বলেছেন:
"বেশি খাওয়া রোজার উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে।" অতএব, ইফতার করার সময় পরিমিতি বজায় রাখা উচিত। খেজুর, পানি, এবং সুষম খাবারের মাধ্যমে শরীরকে পূর্ণ করা উত্তম।

৫. রমজান মাসের অন্যান্য সুন্নত আমল রমজান মাসের পুরো সময়কেই সুন্নত পদ্ধতিতে পালন করা উচিত। যেমন, সেহরি খাওয়া, রাতের সময় তিলাওয়াত করা, এবং বেশি বেশি দান-খয়রাত করা। এতে রমজান মাসের পূর্ণ ফজিলত অর্জিত হয়।

উপসংহার: ইফতার একটি সৌভাগ্যের সময় এবং এটি সঠিকভাবে পালন করা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাসূল (সাঃ) এর সুন্নত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করলে আমাদের ইফতার হয়ে উঠবে আরও সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ। আল্লাহ আমাদের রমজান মাসের সুন্নত আমলগুলো পালন করার তাওফিক দান করুন। আমীন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩