ব্যাটারির স্বাস্থ্য ও ব্যবহার চেক করার উপায়

 

ব্যাটারির স্বাস্থ্য ও ব্যবহার চেক করার উপায়

ব্যাটারির স্বাস্থ্য ও ব্যবহার চেক করার উপায়  

ব্যাটারির স্বাস্থ্য কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বর্তমান সময়ে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ই-বাইক বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারে ব্যাটারির ভূমিকা অপরিসীম। ব্যাটারির স্বাস্থ্য ভালো থাকলে ডিভাইস দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং ভালো পারফরম্যান্স দেয়। কিন্তু ব্যাটারির অবস্থা খারাপ হলে ডিভাইস দ্রুত বন্ধ হয়ে যায়, চার্জ ধরে না এবং সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।

এই পোস্টে ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী করার কিছু কার্যকর উপায় নিয়ে আলোচনা করা হলো।


ব্যাটারির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার উপায়

১. স্মার্টফোনের ব্যাটারি স্বাস্থ্য চেক করা

অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে:

অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ব্যাটারি স্বাস্থ্য চেক করার জন্য আপনি নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন—

ক) কোড ব্যবহার করে চেক করা
১. ফোনের ডায়ালারে যান।
2. ##৪৬৩৬## ( ##4636## ) লিখে ডায়াল করুন।
3. "Battery information" অপশনটিতে ক্লিক করুন।
4. এখানে ব্যাটারির অবস্থা, চার্জিং স্ট্যাটাস ও তাপমাত্রা দেখা যাবে।

খ) থার্ড-পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করা
যদি কোড কাজ না করে, তবে AccuBattery, BatteryGuru, বা CPU-Z এর মতো অ্যাপ ব্যবহার করে ব্যাটারির স্বাস্থ্য চেক করতে পারেন।

আইফোনে ব্যাটারি স্বাস্থ্য চেক করা:

১. Settings > Battery > Battery Health & Charging এ যান।
2. এখানে Maximum Capacity (%) দেখাবে, যা আপনার ব্যাটারির বর্তমান অবস্থা বোঝাবে।
3. "Peak Performance Capability" দেখে বুঝতে পারবেন ব্যাটারি ঠিকভাবে কাজ করছে কি না।


২. ল্যাপটপের ব্যাটারি স্বাস্থ্য পরীক্ষা

উইন্ডোজ ল্যাপটপে:

  1. Command Prompt (cmd) খুলুন।
  2. টাইপ করুন:
    powercfg /batteryreport
    
  3. এতে C:\Users\YourUserName\battery-report.html নামে একটি রিপোর্ট তৈরি হবে।
  4. এই রিপোর্ট খুলে "Battery Capacity History" ও "Battery Life Estimates" থেকে ব্যাটারির অবস্থা বুঝতে পারবেন।

ম্যাকবুকে ব্যাটারি চেক করার উপায়:

  1. Apple Menu > About This Mac > System Report এ যান।
  2. Power অপশনে ক্লিক করুন।
  3. এখানে "Cycle Count" ও "Condition" দেখতে পারবেন, যা ব্যাটারির স্বাস্থ্য নির্দেশ করে।

ব্যাটারি ভালো রাখার উপায়

১. অতিরিক্ত চার্জ দেওয়া এড়ানো

ব্যাটারি ১০০% চার্জ হয়ে গেলে প্লাগ খুলে ফেলুন। দীর্ঘক্ষণ চার্জে রেখে দিলে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা কমতে পারে।

২. ০% পর্যন্ত নামতে না দেওয়া

ব্যাটারির চার্জ ২০% এর নিচে নামতে না দেওয়াই ভালো। ২০%-৮০% চার্জের মধ্যে রাখলে ব্যাটারির আয়ু বাড়ে।

৩. বেশি গরম বা ঠান্ডা এড়ানো

অত্যধিক গরম (৩৫°C এর বেশি) বা ঠান্ডা (০°C এর নিচে) পরিবেশ ব্যাটারির ক্ষতি করতে পারে।

৪. ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপস বন্ধ রাখা

অনেক অ্যাপ ব্যাটারি বেশি ব্যবহার করে। অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ বন্ধ রাখলে ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

৫. দ্রুত চার্জার (Fast Charger) ব্যবহার করা এড়ানো

ফাস্ট চার্জার ব্যাটারির আয়ু দ্রুত কমিয়ে দেয়। তাই প্রয়োজনে ব্যবহার করুন, তবে সবসময় নয়।

৬. ব্যাটারি ক্যালিব্রেশন করা

প্রতি ১-২ মাসে একবার ব্যাটারিকে সম্পূর্ণ চার্জ দিয়ে তারপর ০% পর্যন্ত নামিয়ে দিন। এতে ব্যাটারির সঠিক পারফরম্যান্স বজায় থাকে।


শেষ কথা

ব্যাটারির স্বাস্থ্য ভালো থাকলে ডিভাইস দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং চার্জ বেশি সময় ধরে রাখে। নিয়মিত ব্যাটারি চেক করা এবং সঠিকভাবে ব্যবহার করলে ব্যাটারির আয়ু দীর্ঘদিন বজায় থাকবে। আপনি যদি ব্যাটারির স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত হন, তবে উপরের নিয়মগুলো অনুসরণ করে সহজেই ব্যাটারি ভালো রাখতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩