মাইগ্রেন কমানোর সহজ উপায়
মাইগ্রেন কমানোর সহজ উপায়
![]() |
মাইগ্রেন কমানোর সহজ উপায় |
মাইগ্রেন বা মাথাব্যথা অনেকের জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। এটি সাধারণত একপাশে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে এবং এর সঙ্গে বমি, অন্ধকারে থাকা, গা-ঘোরানো ইত্যাদি উপসর্গ থাকতে পারে। মাইগ্রেন কমানোর জন্য কিছু সহজ উপায় রয়েছে যা আপনি চেষ্টা করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, যদি সমস্যা গুরুতর হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
:
১. পানি পান করা
মাইগ্রেনের অন্যতম প্রধান কারণ dehydration (শরীরের পানির অভাব)। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা মাইগ্রেনের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
২. নিয়মিত খাবার খাওয়া
অনিয়মিত খাবার খাওয়া বা দীর্ঘ সময় না খাওয়া মাইগ্রেনের কারণ হতে পারে। নিয়মিত সময়সীমার মধ্যে খাবার খাওয়া এবং খাবারের মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট রাখা মাইগ্রেনের প্রকোপ কমাতে সাহায্য করতে পারে।
৩. পর্যাপ্ত ঘুম
অপর্যাপ্ত বা অস্বাভাবিক ঘুম মাইগ্রেনের অন্যতম কারণ হতে পারে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। শোয়ার আগে কোনো ধরনের স্ট্রেস বা উত্তেজনা থেকে বিরত থাকুন।
৪. স্ট্রেস কমানো
স্ট্রেস এবং মানসিক চাপ মাইগ্রেনের উপসর্গ বাড়াতে পারে। যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, প্রানায়াম (শ্বাস নিয়ন্ত্রণ) ইত্যাদি স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং মাইগ্রেনের উপসর্গ কমাতে সহায়তা করতে পারে।
৫. ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা
কিছু মানুষের জন্য ক্যাফেইন (কফি, চা) এবং অ্যালকোহল মাইগ্রেনের উস্কানি হতে পারে। তাই এই ধরনের পানীয় কম খাওয়া বা একেবারে বাদ দেওয়া ভাল।
৬. আর্দ্রতা বজায় রাখা
আবহাওয়া পরিবর্তন, বিশেষ করে অতিরিক্ত গরম বা শীত মাইগ্রেন বাড়াতে পারে। এই কারণে আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে হবে। শীতকালে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার বা গরমকালে পর্যাপ্ত পানি পান করা উপকারী।
৭. প্রাকৃতিক চিকিৎসা
কিছু প্রাকৃতিক উপাদান যেমন আদা, পুদিনা, ক্যামোমিল চা মাইগ্রেনের উপসর্গ কমাতে সহায়তা করতে পারে। বিশেষ করে আদা, যা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি গুণাগুণে ভরপুর, মাইগ্রেন কমাতে সহায়তা করে।
৮. ভিটামিন এবং মিনারেলস
কিছু ভিটামিন যেমন ম্যাগনেসিয়াম এবং রিবোফ্লাভিন (ভিটামিন বি২) মাইগ্রেন কমানোর জন্য উপকারী হতে পারে। আপনি এসব ভিটামিন এবং মিনারেলস সমৃদ্ধ খাবার যেমন কলা, বাদাম, শসা, গাজর ইত্যাদি খেতে পারেন।
৯. ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক
মাথার ব্যথা কমানোর জন্য কিছু মানুষ ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক ব্যবহার করে। ঠাণ্ডা প্যাক মাথার যন্ত্রণার স্থানটিতে কয়েক মিনিটের জন্য চাপলে উপকার পাওয়া যেতে পারে, আবার কিছু মানুষের জন্য গরম সেঁক আরও কার্যকরী হতে পারে।
১০. ম্যাসাজ
কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মাথার এবং ঘাড়ের হালকা ম্যাসাজ মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করতে পারে। আপনি বিশেষ করে ঘাড় ও কাঁধের পেশির উপর ম্যাসাজ করতে পারেন।
১১. সঠিক পোজিশনে বসা
দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রীনে কাজ করা থেকে মাথাব্যথা বাড়তে পারে। তাই সঠিক পোজিশনে বসা এবং মাঝে মাঝে ব্রেক নেওয়া মাইগ্রেন কমাতে সাহায্য করতে পারে।
শেষ কথা
মাইগ্রেন থেকে মুক্তি পেতে কিছু সাধারণ জীবনযাপন পরিবর্তন খুবই সহায়ক হতে পারে। তবে, যদি মাইগ্রেন খুব তীব্র হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।