রোজা ভঙ্গের কারণ ও কাফফারা
রোজা ভঙ্গের কারণ ও কাফফারা
রোজা ইসলামে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হিসেবে রোজা পালন করা মুসলমানদের উপর ফরজ। তবে রোজা পালনকালে কিছু বিষয় এমন হতে পারে যার কারণে রোজা ভঙ্গ হতে পারে। এই পোস্টে আমরা রোজা ভঙ্গের কারণ এবং তার কাফফারা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
রোজা ভঙ্গের কারণ
১. খাওয়া বা পান করা: রোজা ভঙ্গের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল খাওয়া বা পান করা। রোজা অবস্থায় দিনে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছু খাওয়া বা পান করা ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে নিষেধ।
-
যৈবিক সম্পর্ক: দিনের বেলা রোজা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা রোজা ভঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এটি রোজাকে সম্পূর্ণভাবে ভঙ্গ করে দেয়।
-
ঔষধ বা ইনজেকশন গ্রহণ: কোনো ধরনের ঔষধ বা ইনজেকশন গ্রহণ করলে রোজা ভঙ্গ হতে পারে, বিশেষত যদি তা শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে। তবে, যদি চিকিৎসা প্রয়োজন হয়, তাহলে রোজা ভঙ্গ হলে কাফফারা ও পুনরায় রোজা রাখতে হয়।
-
উল্টো পথ দিয়ে কিছু প্রবাহিত হওয়া: যেমন, যদি কোনো কিছু শরীরের ভেতরে প্রবাহিত হয় (যেমন, চোখের ড্রপ, নাকের ড্রপ ইত্যাদি), তাতে রোজা ভঙ্গ হতে পারে।
-
বেশি পরিমাণে কষ্টকর কাজ করা: রোজা অবস্থায় খুব কঠিন ও কষ্টকর কাজ করা বা শারীরিক পরিশ্রমও মাঝে মাঝে রোজা ভঙ্গের কারণ হতে পারে, যদিও এটা কখনোই সাধারণ নিয়মের আওতায় পড়ে না।
রোজা ভঙ্গ হলে কাফফারা
যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা কোনো গুরুতর কারণে রোজা ভঙ্গ করেছেন, তাকে কাফফারা দিতে হয়। কাফফারা হল এমন এক ধরণের শাস্তি বা ক্ষতিপূরণ, যা রোজা ভঙ্গ করার কারণে ইসলামে নির্ধারিত থাকে।
১. কাফফারা কী? রোজা ভঙ্গের জন্য কাফফারা হল দুইটি ব্যাপার:
- রোজা রাখা: প্রথমত, সেই ব্যক্তি রোজা ভঙ্গ করার পর এক বা একাধিক রোজা রাখতে হবে। তাকে পরবর্তী সময় একাধিক রোজা রাখতে হবে যতক্ষণ না তার কাফফারা পূর্ণ হয়।
- কাফফারা খাওয়া: যদি কোনো ব্যক্তির জন্য রোজা রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে তাকে দুটো দান করতে হবে—একজন মিসকিন বা দরিদ্র ব্যক্তিকে দুটো রুটি বা একদিনের খাদ্য দান করতে হবে।
২. এটা কীভাবে সম্পন্ন করবেন? কাফফারা অবশ্যই খোলসা করে রাখা উচিত এবং দানটি সত্যিকারভাবে দরিদ্রদের মধ্যে প্রদান করা উচিত। কারো কাছে বেশি টাকা থাকলে, তাদের দ্বারা কাফফারা সম্পন্ন করা উচিত।
শেষ কথা
রোজা ভঙ্গ করা ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে খুবই গুরুতর এবং এর ফলস্বরূপ কাফফারা গ্রহণের প্রয়োজন হয়। তাই, মুসলমানদের উচিত রোজা পালনের সময় নিজের অবস্থান নিশ্চিত করা, যাতে রোজা ভঙ্গ না হয় এবং যদি তা হয়ে যায়, তবে কাফফারা পালন করা।