রমাদানে মিথ্যা বলা কি রোজা নষ্ট করে?

রমাদানে মিথ্যা বলা কি রোজা নষ্ট করে?


রমাদানে মিথ্যা বলা কি রোজা নষ্ট করে? 

রমাদান একটি অত্যন্ত পবিত্র মাস, যেখানে মুসলিমরা সিয়াম পালন করে। সিয়াম বা রোজা কেবল খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার নাম নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ আত্মসংযমের প্রক্রিয়া। রোজার মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষকে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য ও তাকওয়া অর্জন করতে সহায়তা করা। তবে অনেকেই প্রশ্ন করেন, রমাদানে যদি কেউ মিথ্যা বলে, তাহলে কি তার রোজা নষ্ট হয়ে যাবে?

ইসলামিক শরীয়তের আলোকে বলা যায়, মিথ্যা বলা রোজা ভঙ্গ করে না। অর্থাৎ, শুধুমাত্র মিথ্যা বলার কারণে রোজা বাতিল হয় না। তবে, মিথ্যা বলার কারণে রোজার মূল উদ্দেশ্য এবং অর্জিত স্পিরিচুয়াল উপকারিতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কেননা রোজার মূল লক্ষ্য হচ্ছে নফস (ইচ্ছা) ও অন্তরের দাসত্বকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং আল্লাহর প্রতি প্রগাঢ় ভয় ও শ্রদ্ধা অনুভব করা। মিথ্যা বলা বা অন্য কোনো গুনাহ করার ফলে, রোজার সেই আধ্যাত্মিক উপকারিতা কমে যেতে পারে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
“যে ব্যক্তি রোজা রেখে মিথ্যা কথা বলা ও কাজ করা থেকে বিরত না থাকে, আল্লাহ তার কিছুই গ্রহণ করেন না।” (বুখারি)

এছাড়া, রমাদানে রোজা পালনকারী ব্যক্তি যদি শুধু খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকে, কিন্তু তার ভাষা ও কাজের মধ্যে কোনো ধরনের পাপ বা গুনাহ থাকে, তবে সে সত্যিকারভাবে রোজা পালন করছে না। অর্থাৎ, মিথ্যা বলা বা অন্য কোনো গুনাহ করা রোজার আত্মিক পবিত্রতা নষ্ট করতে পারে।

তবে, মিথ্যা বলা রোজা ভঙ্গের মতো গুরুতর কোনো বিষয় নয়, কিন্তু এটি মানুষকে আল্লাহর প্রতি আরো বেশি আনুগত্য ও সততার পথে পরিচালিত করতে বাধা দেয়। তাই, রমাদান মাসে কেবল খাদ্য থেকে নয়, বরং মিথ্যা, গীবত, অপবাদ, এবং অন্যান্য পাপাচার থেকেও দূরে থাকতে হবে।

উপসংহার:
মিথ্যা বলার কারণে রোজা বাতিল হয় না, তবে এটি রোজার আধ্যাত্মিক উপকারিতা নষ্ট করতে পারে। তাই রমাদানে সিয়াম পালনকারী একজন মুসলিমের উচিত, কেবল খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকা নয়, বরং সমস্ত পাপ ও গুনাহ থেকে নিজেকে রক্ষা করা। এর মাধ্যমে রোজা তার পূর্ণ অর্থে পরিপূর্ণ হবে এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কৃত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩