দাঁতের মাজন ও মিসওয়াক ব্যবহারে রোজা ভাঙবে কি?
দাঁতের মাজন ও মিসওয়াক ব্যবহারে রোজা ভাঙবে কি?
![]() |
দাঁতের মাজন ও মিসওয়াক ব্যবহারে রোজা ভাঙবে কি? |
রমজান মাসে রোজা পালন আমাদের উপর ফরজ। রোজা রাখার সময় অনেক দিক বিবেচনা করতে হয়, এবং যেকোনো ভুল কিছু করার ফলে রোজা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে, রোজা ভাঙবে কি না এমন কিছু সাধারণ প্রশ্ন থাকে যা আমাদের মনে আসে। এর মধ্যে একটি হলো দাঁতের মাজন বা মিসওয়াক ব্যবহারের ক্ষেত্রে রোজা ভাঙবে কি না।
দাঁতের মাজন ও মিসওয়াকের ব্যবহার
দাঁতের মাজন বা মিসওয়াক ব্যবহার মুসলিমদের জন্য একটি সুন্নত। নবী করীম (সঃ) মিসওয়াক ব্যবহার করার উপর অনেক গুরুত্ব দিয়েছেন, এবং এটি সুন্নত মুয়াক্কাদা বা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত হিসেবে বিবেচিত। মিসওয়াক ব্যবহার শুধু দাঁত পরিষ্কার রাখার জন্য নয়, বরং এটি মুখের তাজা গন্ধ এবং ভালো স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী।
রোজার মধ্যে মিসওয়াক বা দাঁতের মাজন ব্যবহারের বিধি
রোজার মধ্যে মিসওয়াক বা দাঁতের মাজন ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে কিছু সতর্কতা আছে।
1. পিপঁড়া বা অন্য কোনো কিছু গেলার সম্ভাবনা
রোজা অবস্থায় দাঁতের মাজন বা মিসওয়াক ব্যবহার করার সময় পিপঁড়া বা দন্তমালা ও অন্যান্য কিছু গেলার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে, যদি আপনি মিসওয়াক করেন এবং কোনো কিছু গিলে ফেলেন, তবে রোজা ভেঙে যাবে। তাই, মিসওয়াক বা দাঁতের মাজন ব্যবহারের সময় খুব সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত যেন কিছু গেলা না হয়।
2. সুগন্ধি বা মিষ্টি রাসায়নিক গন্ধ
অনেক মিসওয়াকের মধ্যে সুগন্ধি বা মিষ্টি রাসায়নিক গন্ধ থাকে। যদিও এটি গিলে না ফেললে রোজা ভাঙে না, তবে এমন কিছু ব্যবহার না করা ভালো, যাতে গন্ধ বা কিছু রাসায়নিক শোষণ হতে পারে।
3. সঠিক সময় নির্বাচন
যদি সম্ভব হয়, মিসওয়াক বা দাঁতের মাজন ব্যবহার রাত্রিকালীন সেহরি বা ইফতারের সময় করা ভালো, কারণ দিনের বেলা তৃষ্ণার কারণে কিছু গেলার আশঙ্কা থাকে।
ইসলামী মতামত
ইসলামের বিভিন্ন ফিকাহ অনুসারে, রোজা অবস্থায় দাঁতের মাজন বা মিসওয়াক ব্যবহার করা সম্পূর্ণরূপে বৈধ, তবে যতটা সম্ভব সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনো কিছু গেলা না হয়। অনেক ইসলামি পণ্ডিত ও আলেমগণ বলেন যে, মিসওয়াক বা দাঁতের মাজন ব্যবহারে রোজা ভাঙবে না যদি কিছু গেলা না হয়। তবে, গলা দিয়ে কোনো কিছু চলে গেলে রোজা ভেঙে যাবে এবং তা কাফফারা দিয়ে পূর্ণ করতে হবে।
উপসংহার
যেহেতু মিসওয়াক বা দাঁতের মাজন ব্যবহার রোজা ভাঙার কারণ হতে পারে যদি কিছু গেলা যায়, তাই এটি করতে হলে সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া, মিসওয়াক করার সময় চেষ্টা করুন যেন কোনো কিছু গিলে ফেলেন না, যাতে আপনার রোজা সঠিক থাকে। যদি কোনো ভুলবশত কিছু গিলে ফেলেন, তাহলে তা আপনার রোজা ভেঙে দেবে এবং আপনাকে কাফফারা দিতে হবে।