শরীরচর্চার সময় কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?

 শরীরচর্চার সময় কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত? 

শরীরচর্চার সময় কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত? 

শরীরচর্চার সময় খাদ্যাভ্যাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ সঠিক খাবারের মাধ্যমে শরীরের শক্তি, পুষ্টি এবং পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া সহায়ক হয়। এই পোস্টে, শরীরচর্চা করার সময় কী ধরনের খাবার খাওয়া উচিত, তা বিস্তারিত আলোচনা করব।

১. শরীরচর্চার আগে খাবার:

শরীরচর্চার আগে খাবার খাওয়ার সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখতে হবে:

  • কার্বোহাইড্রেটস: শরীরের শক্তি সরবরাহের জন্য কার্বোহাইড্রেট গুরুত্বপূর্ণ। শরীরচর্চার আগে সহজপাচ্য কার্বোহাইড্রেট যেমন ওটমিল, কলা, স্যুপ, বা হালকা পরিমাণে শর্করা খাওয়া ভালো।
  • প্রোটিন: মাংসপেশী গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ। খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ কমপক্ষে ২০-৩০ গ্রাম রাখা উচিত। এটি গ্রীলড চিকেন, ডাল, তেলহীন পনির বা ডিম হতে পারে।
  • ফ্যাট: শরীরচর্চার আগে অধিক ফ্যাট না খাওয়া ভালো, কারণ তা শরীরের শক্তির নির্গমনকে বিলম্বিত করতে পারে। তবে, একটি ছোট পরিমাণ স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যেমন অ্যাভোকাডো, বাদাম, বা অলিভ অয়েল খাওয়া যেতে পারে।
  • অর্জন করার সময় পরিপূর্ণ জল পান করা উচিত: শরীরচর্চার আগে হাইড্রেশন অপরিহার্য। শুকনো শরীরচর্চার আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া উচিত, যাতে শারীরিক কার্যক্ষমতা বজায় থাকে।

বেশ কিছু উদাহরণ:

  • কলা, ওটমিল এবং এক কাপ গ্রিক দই
  • গ্রীলড চিকেন স্যান্ডউইচ (হোলগ্রেন ব্রেড)
  • একটি ছোট বাদাম ও কলার স্মুদি

২. শরীরচর্চার পরে খাবার:

শরীরচর্চার পর পেশী পুনরুদ্ধার এবং শক্তি পুনরায় ফিরে পাওয়ার জন্য সঠিক খাবার প্রয়োজন। প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট এই সময় বেশ গুরুত্বপূর্ণ।

  • প্রোটিন: শরীরচর্চার পরে পেশীর পুনর্গঠন খুব গুরুত্বপূর্ণ, এবং তাই প্রোটিন গ্রহণ অপরিহার্য। এটি পেশীর ক্ষত প্রতিরোধ করে এবং নতুন পেশী গঠন সহায়ক হয়।
  • কার্বোহাইড্রেটস: শরীরচর্চার পর কার্বোহাইড্রেট খাওয়া অপরিহার্য, কারণ এটি শরীরের শক্তির পুনরুদ্ধারে সহায়ক হয়। অতিরিক্ত গ্লাইকোজেনের স্টোরেজ পূর্ণ করতে এই সময় বেশি শর্করা গ্রহণ করা যায়।
  • জল এবং ইলেক্ট্রোলাইটস: শরীরচর্চার পর পানি এবং ইলেক্ট্রোলাইটস পুনরুদ্ধার করা জরুরি, যাতে শরীরের জলবায়ু সঠিক থাকে এবং অঙ্গগুলি সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।
  • ভিটামিনস এবং মিনারেলস: শরীরচর্চার পর ফ্রুটস এবং সবজি খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনস এবং মিনারেলস যোগ করা উচিত, যা শরীরের পুনরুদ্ধারের জন্য সহায়ক হয়।

বেশ কিছু উদাহরণ:

  • গ্রিলড চিকেন, ব্রাউন রাইস এবং সবজি
  • প্রোটিন শেক (কলিজ, পিপার, গ্রীক দই ও বাদাম)
  • স্যালমন মাছ, শাকসবজি এবং মাশড সোয়েট পট্যাটো

৩. শরীরচর্চার সময় সাধারণ খাবার নিয়ম:

  • খাবার খাওয়ার সময় শরীরচর্চার ১-১.৫ ঘণ্টা আগে ও পরে উপযুক্ত খাবার নির্বাচন করুন।
  • ভারী খাবার কখনোই শরীরচর্চার আগে খাওয়ার চেষ্টা করবেন না। তবে হালকা খাবার উপকারী।
  • শরীরচর্চার পরে প্রোটিন এবং শর্করা সমৃদ্ধ খাবার খেতে ভুলবেন না।
  • শরীরচর্চার সময় মধুর পানীয় (যেমন সোডা) বা অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।
  • শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম, মাছ ও মাংসের স্বাস্থ্যকর উৎস থেকে প্রাপ্ত পুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ।

সার্বিক উপসংহার:

শরীরচর্চার সময় সঠিক খাদ্যাভ্যাস শরীরের কার্যক্ষমতা, শক্তি ও পেশী গঠন নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। উপরের উপদেশগুলো অনুসরণ করলে শরীরচর্চার পর আপনি সুস্থ ও শক্তিশালী অনুভব করবেন। শরীরচর্চার সময় পুষ্টি, জল ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম সহ বিভিন্ন উপাদানগুলোর সঠিক সমন্বয় আপনাকে লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩