নবিজির (সা.) রমাদান পালন করার পদ্ধতি

 নবিজির (সা.) রমাদান পালন করার পদ্ধতি

নবিজির (সা.) রমাদান পালন করার পদ্ধতি 


রমাদান মাস মুসলমানদের জন্য একটি পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মাস। এই মাসে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বান্দাদের জন্য রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের দরজা খুলে দেন। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাদান মাসকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করতেন। তাঁর রমাদান পালন করার পদ্ধতি আমাদের জন্য এক উত্তম আদর্শ। আসুন, জেনে নিই নবিজির (সা.) রমাদান পালন করার পদ্ধতি:

১. সেহরি খাওয়ার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া

নবিজি (সা.) সেহরি খেতে উৎসাহিত করতেন এবং বলতেন:

“সেহরির খাবার গ্রহণ করো, কারণ এতে বরকত রয়েছে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯২৩)

তিনি সেহরি দেরিতে খেতেন এবং তা ফজরের কিছুক্ষণ আগে শেষ করতেন।

২. ইফতারে তাড়াতাড়ি করা

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইফতার করতে দেরি করতেন না, বরং সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করতেন। তিনি বলতেন:

“মানুষ তখন পর্যন্ত কল্যাণের মধ্যে থাকবে, যতক্ষণ তারা ইফতার করতে দেরি না করে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯৫৭)

তিনি সাধারণত খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন, খেজুর না থাকলে পানি পান করতেন।

৩. তারাবিহ ও কিয়ামুল লাইলের আমল

নবিজি (সা.) রমাদানে তারাবিহ নামাজ পড়তেন এবং সাহাবাদেরও তা পড়ার জন্য উৎসাহিত করতেন। তিনি বলতেন:

“যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে এবং সওয়াব লাভের আশায় রমাদানে কিয়াম (তারাবিহ) আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২০০৮)

৪. কুরআন তিলাওয়াত ও ইবাদতের প্রতি গুরুত্ব

রমাদান মাস ছিল কুরআন নাজিলের মাস। নবিজি (সা.) এই মাসে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করতেন। প্রত্যেক বছর রমাদানে তিনি জিবরাঈল (আ.) এর সাথে কুরআন মুকাবিলা করতেন।

৫. দোয়া ও ইস্তিগফার করা

রাসূল (সা.) রমাদানে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করতেন এবং ইস্তিগফার করতেন। তিনি বলেছেন:

“তিন ব্যক্তির দোয়া প্রত্যাখ্যাত হয় না: রোজাদারের ইফতারের সময় দোয়া, ন্যায়পরায়ণ শাসকের দোয়া এবং মজলুমের দোয়া।” (তিরমিজি, হাদিস: ২৫২৬)

৬. দান-সদকার প্রতি গুরুত্ব

রমাদান মাসে নবিজি (সা.) অত্যন্ত উদার হয়ে যেতেন এবং অনেক বেশি দান করতেন। হাদিসে এসেছে:

“রাসূলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সবচেয়ে উদার ব্যক্তি, আর রমাদান মাসে তিনি আরও বেশি উদার হয়ে যেতেন।” (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৯০২)

৭. ইতিকাফ পালন

নবিজি (সা.) রমাদানের শেষ দশ দিনে ইতিকাফ করতেন। তিনি মসজিদে অবস্থান করতেন এবং সম্পূর্ণরূপে ইবাদতে মশগুল থাকতেন।

উপসংহার

নবিজি (সা.) আমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তাঁর রমাদান পালন করার পদ্ধতি অনুসরণ করলে আমরা রমাদান মাসের প্রকৃত বরকত লাভ করতে পারবো। আসুন, আমরা তাঁর সুন্নাহ মেনে রমাদান পালন করি এবং আল্লাহর রহমত লাভের চেষ্টা করি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩