সামাজিক উদ্যোগের জন্য ফান্ডিং কিভাবে সংগ্রহ করবেন
সামাজিক উদ্যোগের জন্য ফান্ডিং কিভাবে সংগ্রহ করবেন
সামাজিক উদ্যোগ পরিচালনার জন্য শুধু ভালো পরিকল্পনাই যথেষ্ট নয়; এর জন্য প্রয়োজন যথাযথ ফান্ডিং। অনেক উদ্যোগ আর্থিক সংকটের কারণে বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। তবে সঠিক কৌশল অনুসরণ করে ফান্ড সংগ্রহ করা সম্ভব। এই লেখায় আমরা সামাজিক উদ্যোগের জন্য ফান্ডিং সংগ্রহের বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব।
![]() |
সামাজিক উদ্যোগের জন্য ফান্ডিং কিভাবে সংগ্রহ করবেন |
১. স্বপ্রণোদিত বিনিয়োগ
নিজের উদ্যোগে প্রথম বিনিয়োগ করা হলে তা অন্য বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করে। এর জন্য আপনি ব্যক্তিগত সঞ্চয়, বন্ধু ও পরিবারের সাহায্য নিতে পারেন।
কীভাবে করবেন?
✔️ নিজের সঞ্চয় থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিয়োগ করুন।
✔️ বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে সাহায্য চান।
✔️ একাধিক ছোট বিনিয়োগকারী খুঁজুন যারা স্বল্প পরিমাণে সাহায্য করতে পারে।
২. অনুদান ও সরকারি সহায়তা
সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা সামাজিক উদ্যোগের জন্য অনুদান ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। এই সুযোগগুলোর সদ্ব্যবহার করলে আপনার উদ্যোগের জন্য অর্থ সংগ্রহ সহজ হবে।
কীভাবে আবেদন করবেন?
✔️ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অনুদান কর্মসূচির তালিকা সংগ্রহ করুন।
✔️ আপনার উদ্যোগের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য সুনির্দিষ্ট করে আবেদনপত্র তৈরি করুন।
✔️ যেসব সংস্থা সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৩. ক্রাউডফান্ডিং (Crowdfunding)
বর্তমানে ক্রাউডফান্ডিং একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি যেখানে জনগণের কাছ থেকে ছোট ছোট অর্থ সংগ্রহ করা হয়।
জনপ্রিয় ক্রাউডফান্ডিং প্ল্যাটফর্ম:
🔹 Kickstarter
🔹 GoFundMe
🔹 Indiegogo
🔹 Milaap (ভারতের জন্য)
কীভাবে করবেন?
✔️ আকর্ষণীয় ক্যাম্পেইন তৈরি করুন।
✔️ ভিডিও, ছবি ও শক্তিশালী কনটেন্ট ব্যবহার করে প্রচার করুন।
✔️ সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছান।
৪. কর্পোরেট স্পন্সরশিপ
বিভিন্ন কর্পোরেট কোম্পানি সামাজিক উদ্যোগের জন্য স্পন্সরশিপ প্রদান করে।
স্পন্সরশিপ পাওয়ার জন্য করণীয়:
✔️ আপনার উদ্যোগের সামাজিক প্রভাব তুলে ধরে প্রস্তাব তৈরি করুন।
✔️ স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক কোম্পানির CSR (Corporate Social Responsibility) বিভাগে আবেদন করুন।
✔️ নেটওয়ার্কিং বাড়ান ও ইভেন্টে অংশ নিন।
৫. সামাজিক ব্যবসা মডেল
সামাজিক উদ্যোগে ফান্ডিংয়ের একটি টেকসই পদ্ধতি হলো সামাজিক ব্যবসা চালু করা। এতে ব্যবসার মুনাফার একটি অংশ উদ্যোগের জন্য ব্যবহার করা হয়।
উদাহরণ:
🔹 কম মূল্যে পণ্য বা সেবা বিক্রি করা, যা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের সাহায্য করে।
🔹 মুনাফার একটি অংশ দান করা।
৬. প্রতিযোগিতা ও ফেলোশিপ
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও জাতীয় সংস্থা সামাজিক উদ্যোগের জন্য ফেলোশিপ ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
উদাহরণ:
🔹 Ashoka Fellowship
🔹 Echoing Green Fellowship
🔹 UnLtd India
কীভাবে সুযোগ গ্রহণ করবেন?
✔️ আবেদন প্রক্রিয়া বুঝে নিন।
✔️ শক্তিশালী ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করুন।
✔️ বিচারকদের আকৃষ্ট করতে ভালো উপস্থাপনা করুন।
৭. ব্যাংক ঋণ ও মাইক্রোফাইন্যান্স
সামাজিক উদ্যোগের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ও মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান থেকে সহজ শর্তে ঋণ নেওয়া যায়।
যেখানে আবেদন করতে পারেন:
✔️ SME ব্যাংকিং প্রোগ্রাম
✔️ গ্রামীণ ব্যাংক ও অন্যান্য মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান
✔️ সামাজিক উদ্যোগের জন্য নির্দিষ্ট ঋণ সুবিধা
উপসংহার
সামাজিক উদ্যোগের জন্য ফান্ডিং সংগ্রহ করা চ্যালেঞ্জিং হলেও, সঠিক কৌশল ব্যবহার করে তা অর্জন করা সম্ভব। স্বপ্রণোদিত বিনিয়োগ, অনুদান, ক্রাউডফান্ডিং, স্পন্সরশিপ, সামাজিক ব্যবসা মডেল, প্রতিযোগিতা ও ফেলোশিপ এবং ব্যাংক ঋণসহ বিভিন্ন উপায়ে আপনি আপনার উদ্যোগের জন্য অর্থ সংগ্রহ করত