রমাদানের রাত্রির বিশেষ আমল

 রমাদানের রাত্রির বিশেষ আমল

রমাদানের রাত্রির বিশেষ আমল  


রমাদান মাস বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ একটি মাস। এ মাসের দিন যেমন রোজার মাধ্যমে ইবাদতের সুযোগ এনে দেয়, তেমনি এর রাত্রিগুলোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রমাদানের রাতগুলোতে বিশেষ কিছু আমল করলে আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করা সম্ভব এবং গুনাহ মাফের সুযোগ পাওয়া যায়।

১. তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়

রমাদানের রাত্রিগুলোতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন:

"তারা রাতের সামান্য অংশেই ঘুমায় এবং শেষ রাতে তারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।" (সূরা আয-যারিয়াত: ১৭-১৮)

তাহাজ্জুদ নামাজ বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে দেয় এবং দোয়া কবুলের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সময় এটি।

২. কিয়ামুল লাইল (তারাবিহ নামাজ)

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

"যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় রমাদানে রাতের নামাজ (তারাবিহ) আদায় করে, তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।" (বুখারি ও মুসলিম)

সুতরাং রমাদানের রাতগুলোতে তারাবিহ নামাজের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত।

৩. কুরআন তিলাওয়াত

রমাদান হচ্ছে কুরআন নাজিলের মাস। এ মাসে রাতের বেলা কুরআন তিলাওয়াত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাদানে জিবরাইল (আ.)-এর সঙ্গে কুরআন তিলাওয়াত করতেন।

৪. আল্লাহর জিকির ও দোয়া

রাতের বেলা আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করা উচিত। বিশেষ করে নিম্নলিখিত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়তে পারেন:

  • আস্তাগফিরুল্লাহ (আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি)
  • লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই)
  • সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম (আল্লাহর পবিত্রতা ও প্রশংসা, মহান ও মহিমাময় আল্লাহ)
  • আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি (হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, তুমি ক্ষমা করতে ভালোবাসো, তাই আমাকে ক্ষমা করো)

৫. দান-সদকা করা

রমাদানের রাতে দান-সদকা করলে তার অনেক বেশি প্রতিদান রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:

"রমাদানে উত্তম দান হলো সদকা।" (তিরমিজি)

এ ছাড়া রমাদানের সর্বশ্রেষ্ঠ রাত ‘লাইলাতুল কদর’-এ দান-সদকা করা অগণিত সওয়াবের কারণ হতে পারে।

৬. লাইলাতুল কদর সন্ধান করা

রমাদানের শেষ দশকের বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে লাইলাতুল কদর রয়েছে। এই রাতে ইবাদত করা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে উত্তম।

আল্লাহ বলেন:

"লাইলাতুল কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।" (সূরা আল-কদর: ৩)

সুতরাং, এই রাতগুলোতে ইবাদত ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর রহমত কামনা করা উচিত।

উপসংহার

রমাদানের রাতগুলোর প্রতিটা মুহূর্ত মূল্যবান। তাই সময় নষ্ট না করে আল্লাহর ইবাদত, কুরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা ও দোয়া করার মাধ্যমে এ সময়কে কাজে লাগানো উচিত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমাদানের রাতগুলোতে বেশি বেশি আমল করার তৌফিক দান করুন, আমিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩